মুসলিম সাম্রাজ্যের পতন, আধুনিক যুগে পিছিয়ে থাকা মুসলিমগণ ও ইসলাম।

মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর যুগ হতে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত মুসলিম জাতি ছিল পৃথিবীর একটি প্রভাবশালী সাম্রাজ্যবিজয়ী শক্তি। ২য় বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্যের পতন মুসলিমদের চূড়ান্ত পতন ত্বরান্বিত করে। মুসলিম শক্তির পতন ঘটার সাথে সাথে পৃথিবীতে আধিপত্য বিস্তার করে পশ্চিমা শক্তি। আর এ সময় বিজ্ঞান গবেষণা, কারিগরি শিক্ষা, সামরিক শক্তি বৃদ্ধি সহ নানা ক্ষেত্রে মনোযোগ দেয় পশ্চিমা শক্তিগুলো। অন্যদিকে, ঢাল-তলোয়ারের যুগের বাঘ মুসলিম শক্তি আধুনিক যুগের সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে ব্যর্থ হয়। ফলে তলোয়ারের যুগে শ্রেষ্ঠত্বের শীর্ষে থাকা মুসলিম বাঘ আধুনিক যুগে এসে বিড়াল হয়ে যায়। বিজ্ঞান- প্রযুক্তিতে, কারিগরি শিক্ষায়, গবেষণায় সব দিক দিয়ে তারা পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে, পশ্চিমা শক্তি এ সময়টাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় মনোযোগ দেয় এবং সক্ষমতাও কয়েকগুণ বাড়িয়ে নেয়।

আজ পৃথিবীর সুপারপাওয়ার দেশগুলো আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন, ইসরাইল কোনোটিই মুসলিম দেশ নয়। ঢাল-তলোয়ারের যুগে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকা মুসলিম দেশগুলো আজ হযরত মুহাম্মদ (স.) এর আদর্শ ও শিক্ষা ভুলে গিয়ে দুর্নীতি, বিলাসিতায় মগ্ন।

ঢাল-তলোয়ারের যুগে শ্রেষ্ঠ থাকা মুসলিমরা মগজের যুগে এসে পিছেয়ে পরা জাতিতে পরিণত হয়। কারণ, এখন মগজের যুগ। যে জাতির বুদ্ধির শক্তি অর্থাৎ কারিগরি শক্তি বেশি সে জাতি তত এগিয়ে। তবে, দুর্ভাগ্যবশত মুসলিমরা বিজ্ঞানচর্চার গুরুত্ব এখনো উপলদ্ধি করতে পারেনি। মূর্খ ওলামা যদি বলে জান্নাতি খাবার খাওয়ায় ইহুদিরা বুদ্ধিমান। তবে আমরা ধর্মান্ধরা সেটাই মেনে নিব। কিন্তু ইরানকে টেক্কা দেওয়ার জন্য ইহুদিরা গবেষণায় ব্যয় বাড়িয়ে দিয়ে বুদ্ধিমান হয়েছে এ কথা আমরা মেনে নিতে চাইবো না। আসলে, আল্লাহ নিজেও বলেছেন তিনি মানবজাতিকে শ্রেষ্ঠ ও বুদ্ধিমান জাতি হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু ওরা ওদের বুদ্ধিকে প্রয়োগ করতে জানে। আমরা জানি না। পার্থক্য এখানেই।

ইহুদিরা তাদের মাথা খাটিয়ে পারমাণবিক বোমা, আধুনিক যুদ্ধবিমান বানায় কারণ এখনতো আর ঢাল-তলোয়ারের যুগ নয়। এখন হচ্ছে বিজ্ঞানের যুগ। ইহুদিরা মুসলিম দেশগুলোর উপর গোয়েন্দা নজরদারি চালানোর জন্য স্পাইওয়্যার তৈরি করে। আর এদিকে মুসলিমরা মসজিদে মাইক ব্যবহার করা জায়েজ হবে কিনা সেটা নিয়েই দ্বিধায় রয়েছে!

ইবনে সিনা, ইমাম গাজ্জালি (রহ.), আল-খাওয়ারিজমি, ইবনে হাইসামের মতো মুসলিম বিজ্ঞানী ও দার্শনিকের কীর্তি এখন শুধুই ইতিহাস। ইসলাম কি আবারো তার হারিয়ে ফেলা গৌরব ফিরে পাবে?

Post a Comment

Previous Post Next Post