ইউটিউব সবচেয়ে বড় ভিডিও শেয়ারিং সাইট।
বর্তমানে অনলাইনে টাকা ইনকামের সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হচ্ছে ইউটিউবিং।
ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে চাইলে আপনিও
আয় করতে পারেন হাজার হাজার ডলার।
এজন্য আপনার দরকার একটি ইউটিউব চ্যানেল।
তবে চ্যানেল খোলার সাথে সাথেই কিন্তু আয় করতে পারবেন না।
আপনাকে প্রথমে নিয়মিতভাবে ভিডিও আপলোড দিতে হবে।
যখন আপনার ১২ মাসের মধ্যে ১০০০০ ভিউ, ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচটাইম ও ১০০০ সাবস্ক্রাইব পূরণ হবে তখন আপনি
মনিটাইজেশনের জন্য এপ্লাই করতে পারবেন।আর এসব মানে ১০০০ সাবস্ক্রাইব ১০০০০ ভিউ আর ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচটাইম পূরণের জন্য আপনাকে ধৈর্য ধরে এগুতে হবে।১২ মাসের মধ্যে এসব শর্ত আপনাকে পূরণ করতে হবে।
মানে আপনি টাকা আয় করা শুরু করতে পারবেন।
মাস শেষে গুগল আপনার ব্যাংক একাউন্টে ডলার
পাঠিয়ে দিবে।
তবে আপনার ভিডিও যদি কপিরাইট হয় তাহলে
আপনাকে ইউটিউব মনিটাইজেশন দিবে না।
মানে আপনি যদি কারো ভিডিও কপি করে আপলোড
দেন তাহলে আপনাকে মনিটাইজ দেওয়া তো দূরের
কথা আপনার চ্যানেলটিও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
তাই এসব কাজ থেকে বিরত থাকবেন।
অন্যএর ভিডিওর ক্লিপ কখনো নিজের ভিডিওতে
ব্যবহার করবেন না।
আপনার ভিডিওর মান যদি ভালো হয় তবে এমনিতেই
ভিডিওতে ভিউ বাড়বে।
আরেকটা কথা হচ্ছে চ্যানেল মনিটাইজেশনের পর
গুগল অ্যাডসেন্সের তরফ থেকে আপনার ভিডিওতে
বিজ্ঞাপন শো করবে।
এটার উপর ডিপেন্ড করে আপনার আয় বাড়বে।
আপনার চ্যানেলে যদি ভালো ভিউ থাকে তবে
আপনাকে কোনো চাকরিও করতে হবে না।
আপনি ইউটিউবিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারবেন।
এমন অনেকে আছেন যে যারা শুধু ইউটিউবিং করে
মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতেছেন।
ইউটিউব হতে পারে আপনার ক্যারিয়ার।
এর জন্য আপনাকে শুধু ভালো ভালো ভিডিও তৈরি
করতে হবে।
আর আপনার ভিডিও অবশ্যই কপিরাইট মুক্ত
হতে হবে।প্রথম দিকে আপনি কোনো ভিউ পাবেন না।
আপনাকে ধৈর্য ধরে নিয়মিত ভিডিও আপলোড দিতে হবে।
কি বিষয়ে ভিডিও বানাবেন :-
ইউটিউবে চ্যানেল তৈরির আগে থেকেই কি বিষয়ে ভিডিও বানাবেন তা আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে। আপনাকে এমন বিষয়ে ভিডিও তৈরি করতে হবে যা মানুষ দেখতে চায়। আমি আপনাকে এরকম কিছু ভিডিও সম্পর্কে বলবো যার ভিউয়ারস অনেক বেশী।
কমেডি ভিডিও :- চাইলে আপনার বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে বিভিন্ন কমেডি ভিডিও, ফানি ভিডিও,শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
টেকনোলজি ভিডিও :- আপনি চাইলে টেকনোলজি বিষয়ক ভিডিও তৈরি করতে পারেন। এ ধরণের ভিডিওতে ভিউস ও বেশী আবার প্রতিযোগিতা ও বেশি। যেমন ধরুন :- কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করবেন, কিভাবে ফেসবুকে অটো ফলোয়ার নিবেন এগুলো হচ্ছে টেকনোলজি রিলেটেড ভিডিও। টেকনোলজি ভিডিওতে ফেসক্যাম করলে বেশি ভিউস পাবেন।
নিজের মুখ দেখিয়ে নিজেই নিজের ভিডিওতে উপস্থাপনা করাকে ফেসক্যাম বলে।
অজানা বিষয়ে ভিডিও তৈরি করুন:- অজানা বিষয়ে ভিডিও তৈরি করুন এতে প্রচুর ভিউস পাবেন। যেমন:- জাদুকররা কিভাবে মানুষদের বোকা বানায়। লবণে জোঁক মরে কেন। একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন এরকম ভিডিওতে ভিউস অনেক বেশী হয়।
গেমস রিভিউ:- বিভিন্ন ধরণের গেমস খেলে এবং সেটা স্ক্রীনরেকর্ড করে ভিডিও বানাতে পারেন। যেমন :- ফ্রী-ফায়ার।
মোবাইল আনবক্সিং:- নতুন নতুন মোবাইল আনবক্সিং করে সেই মোবাইলগুলোর সম্পর্কে গ্রাহকদের জানানোর জন্য ভিডিও তৈরি করতে পারেন। যেমন:- স্যামসাং A50 রিভিউ।
টিউটোরিয়াল ভিডিও :- আপনি যদি কোনো বিষয়ে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে সে বিষয়ে টিউটোরিয়াল ভিডিও বানাতে পারেন। যেমন :- কিভাবে ওয়েবসাইট এসইও করে, ওয়েব ডিজাইনিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কম্পিউটার কোর্স ইত্যাদি। এ ধরণের ভিডিওতে ভিউস বেশি হয়।
কার্টুন ভিডিও :- বিভিন্ন শিক্ষামূলক ও বিনোদনমূলক কার্টুন ভিডিও তৈরি করে আপলোড দিলে প্রচুর ভিউস পাবেন।
রান্নার ভিডিও :- আপনি যদি নতুন নতুন খাবার বানানোর কাজে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে রান্নার রেসিপি ভিডিও বানাতে পারেন। ভিডিওতে আপনি দেখাবেন কিভাবে রেসিপি টা তৈরি করলেন।
তবে আপনি যে বিষয়েই ভিডিও তৈরি করেন না কেন আপনার উপস্থাপনা সুন্দর হতে হবে। আর যে বিষয়ে ভিডিও তৈরি করবেন সে বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।
কিভাবে সফল হবেন:-
ভিডিওর মান :- আপনার ভিডিওর মান যদি ভালো হয় তবে ভিউস এমনিতেই বাড়বে। একজন দর্শকের ভূমিকায় নিজের ভিডিওগুলো দেখুন এবং ভুল-ক্রটি গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করুন। ভিডিও আপলোডের সময় আকর্ষণীয় শিরোনাম দিন। আপনার তৈরি করা ভিডিওর সাথে অন্য কোনো চ্যানেলের ভালো ভিউস পাওয়া ভিডিওর সাথে তুলনা করুন। আর হ্যাঁ অবশ্যই ভালোমানের থাম্বনেল বানানোর চেষ্টা করবেন। আমরা যখন ইউটিউবে কোনো ভিডিওতে ঢুকি তখন কিন্ত ওই ভিডিওর ছবি বা থাম্বনেল দেখেই কিন্ত ক্লিক করি। চাইলে আপনার ভিডিও ভাইরাল করার জন্য বন্ধুদের মোবাইল থেকে ভিডিওটি বারবার প্লে করতে পারেন। আপনার বড়ভাই,আত্নীয় ও বন্ধুদের আপনার চ্যানেলের ভিডিও দেখতে বলতে পারেন। কেউ আপনার ভিডিও সম্পূর্ণ দেখলে গুগল আরো ১০ জনের কাছে ভিডিওটি পৌছে দিবে। এতে আপনার ভিডিওর র্যাংক বাড়বে। আর একটা কথা হলো ভিডিওর শুরুতেই সাবস্ক্রাইব দাও সাবস্ক্রাইব দাও বলে চিল্লাবেন না। বরং ভিডিওর শেষে বলতে পারেন ভিডিওটি ভালো লাগলে আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে পারেন। ভিডিও শুরু করার সময় হ্যালো ভিউয়ারস সবাই কেমন আছেন? আশাকরি ভালো আছেন বলতে বলতে যদি ৫ মিনিট নষ্ট করে ফেলেন তাহলে ভিউয়ারসরা বিরক্ত হয়ে যাবে। তখন তারা আপনার ভিডিও স্কিপ করে অন্য ভিডিওতে চলে যাবে। এতে গুগল ভেবে নিবে যে আপনার ভিডিওতে ভালো কিছু নেই। তখন আপনার ভিডিওর র্যাংক কমে যাবে। আর হ্যাঁ আপনি ইউটিউব ভিডিও এসইও করাতে পারেন বেশি ভিউস পাওয়ার জন্য। এসইও হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। বিভিন্ন ব্লগ বা ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে ইউটিউব ভিডিও কিভাবে এসইও করতে হয় সেটা শিখতে পারেন।
إرسال تعليق